বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই, "কুঁড়ে ঘরে থাকি করো শিল্পের বড়াই আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে।" বাবুই হাসিয়া কহে, "সন্দেহ কি তায়? কষ্ট পাই তবু থাকি নিজের বাসায়। পাকা হোক তবু ভাই পরের ও বাসা নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা।"
ছোটোবেলা টনসিলে গাল প্রায় ফুলতো মা'র কোলে মাথা রেখে সারা রাত কাটতো ঘুম নাই মা'র চোখে, সারা রাত জাগতো বাংলায় সুর করে ছড়া-গান গাইতো।
বড় হয়ে সেই মা'কে তুমি-আমি ভুলে যাই মা'র সেই রাত জাগা রাত আর মনে নাই। মা'কে দেই কষ্ট, তার কথা শুনি না মা'র গাওয়া ছড়া-গান আর ভালো লাগে না। হয়তো বা ভুলে গেছি মা'কে দেওয়া কষ্ট ছোটখাটো কাজ নিয়ে হয়ে গেছি ব্যস্ত। বড় ভাই ওরা যদি আজ বেঁচে থাকতো দিন রাত মা'র মুখে হাসি ফুটে থাকতো মা'র চোখে জল আর বুক ভরা বেদনা আমাদের না আছে নাম না ঠিকানা কী ছিলাম কী হয়েছি! লজ্জায় মরে যাই মা যে কবে হেসেছিলো একটুও মনে নাই।
কার্জন হল থেকে সুর ভেসে আসলো জিন্নাহ'র কথাগুলা বুকে এসে লাগলো হারামিটা করেছিলো অবিচার অন্যায় মা'র মুখ ভিজেছিলো বেদনার কান্নায়
রাজপথ ভেসেছিলো রক্তের বন্যায় ইতিহাস গড়েছিলো বাহাদুর বাঙালি আজ সেই বাঙ্গালিকে অপমান করেছি জব্বার রফিকের মিছিলের মানে কী?
তুমি আমি সব আজ হাটুভাঙ্গা বাঙালি সব তারা দিয়ে গেলো, আমরা কী করেছি? নিজের ভাষাকে ভুলে পরেরটা শিখেছি? হাততালি জুড়ে দাও, সাব্বাশ এই বাঙালি!
নিজের কপালে আজ নিজে লাথি মেরেছি গায়ের চামড়াটাও নিজ হাতে ছিঁড়েছি ছি ছি ছি দেখো বাঙ্গালির কাণ্ড বেহায়া বেশরম দুনিয়ার ভণ্ড।
বাবুই পাখিরও যদি ইচ্ছা করতো অট্টালিকাতে তারাও থাকতে পারতো নিজের সেই কাঁচা ঘর ছাড়তে সে রাজি না কোনো ঝড় তার মত বদলাতে পারেনা
নিজের সেই কুঁড়েঘর ফেলে রেখে যায় না ছি ছি ছি দেখো বাঙ্গালির কারবার মরে গিয়ে পাখি হয়ে জন্মানো দরকার মাইকেল মধুর এই বঙ্গ ভাণ্ডার।
আমাদের ফাঁদে পড়ে একবারে ছারখার বাংলার কবি রা কলম হাতে বসতো বিশ্বটা হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরতো নজরুল-ঠাকুরের বাহাদুরি চলতো
প্রতিবেশী দেশগুলা মাথা নত করতো একদিন ওরা ছিলো বাংলার ভক্ত কালকে যে কী ছিলাম আজকে কী হয়েছি ডোরাকাটা বাঘ থেকে নাক কাটা বাঙালি!